20 May 2024, 12:53 am

জাতিসংঘে বাংলাদেশের ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজ্যুলেশন গৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশ উত্থাপিত ‘শান্তির সংস্কৃতি’ শীর্ষক রেজ্যুলেশনটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। ১১২টি দেশ এই রেজ্যুলেশনটিতে কো-স্পন্সর করেছে।

নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২ মে) জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত বাংলাদেশের পক্ষে রেজ্যুলেশনটি উত্থাপন করেন।

স্থায়ী মিশন বল‌ছে, এ বছর আলোচ্য রেজ্যুলেশনটি একটি বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। কেননা এ বছরে শান্তির সংস্কৃতির ঘোষণা এবং এ বিষয়ক কর্মসূচি ২৫তম বর্ষে পদার্পণ করেছে । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম মেয়াদে সরকার পরিচালনার সময় ১৯৯৯ সালে প্রথমবারের মতো জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে শান্তির সংস্কৃতির ঘোষণা এবং এ বিষয়ক কর্মসূচি গৃহীত হয়। এরপর থেকে প্রতিবছর বাংলাদেশ ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজ্যুলেশনটি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে উপস্থাপন করে আসছে, যা শান্তি ও অহিংসার সংস্কৃতিকে উন্নীত করার জন্য ৮টি বিশেষ ক্ষেত্রকে চিহ্নিত করে সে অনুযায়ী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য সকলকে আহ্বান জানিয়েছে।

এছাড়া সাধারণ পরিষদের সভাপতির নেতৃত্বে ২০১২ সাল থেকে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ বিষয়ে বাংলাদেশ জাতিসংঘে একটি উচ্চ পর্যায়ের ফোরামের আয়োজন করে আসছে।

প্রস্তাবটি উপস্থাপনের সময় রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত বিভিন্ন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষাপটে শান্তির সংস্কৃতির অব্যাহত প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আজ বিশ্ব ক্রমবর্ধমান দ্বন্দ্ব এবং মানবিক মর্যাদা অবজ্ঞার মুখোমুখি। এই ক্রমবর্ধমান সংঘাত ও সহিংসতা উত্তরণে মানবমনে সম্প্রীতি ও সহমর্মিতার ভাবকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে, সমতা ও সব মানুষের সমমর্যাদার চেতনাকে সমুন্নত করতে হবে এবং সর্বোপরি যুদ্ধের চেয়ে শান্তিকে অনেক বেশি লাভজনক করে তুলতে হবে।

এবারের রেজ্যুলেশনটিতে শান্তির সংস্কৃতির ঘোষণা এবং এ বিষয়ক কর্মসূচির ২৫তম বার্ষিকী যথাযথভাবে পালন ও উদযাপনের জন্য সাধারণ পরিষদের সভাপতিকে দিনব্যাপী একটি উচ্চ পর্যায়ের ফোরাম আহ্বান করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এছাড়া এ রেজ্যুলেশনে সাধারণ পরিষদের সদস্য রাষ্ট্র, জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থা, নাগরিক সমাজ, বেসরকারি খাত, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং মিডিয়াসহ অন্যান্য অংশীজনদের শিক্ষা ও জনসচেতনতা সম্প্রসারণসহ অন্যান্য আয়োজনের মাধ্যমে যথাযথভাবে এই বার্ষিকীটি পালনের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

যুদ্ধ ও ধ্বংসযজ্ঞে বাংলাদেশের নিজস্ব অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত মুহিত বলেন, জাতিসংঘে শান্তির সংস্কৃতির ধারণা প্রবর্তনের বাংলাদেশের উদ্যোগটি আমাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে অনুপ্রাণিত।

তিনি আরও বলেন, বৈষম্য, বর্ণগত অসহিষ্ণুতা এবং পরাধীনতা আমাদের একটি ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করে। এ কারণেই আমরা শান্তির প্রসারকে আমাদের পররাষ্ট্রনীতির একটি মৌলিক নীতিতে পরিণত করেছি।

রেজ্যুলেশনটির বিবেচনার পূর্বে শান্তির সংস্কৃতির উপর সাধারণ পরিষদে একটি সাধারণ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বহুসংখ্যক সদস্য রাষ্ট্র বক্তব্য প্রদান করে । এ সময় তারা শান্তির সংস্কৃতির ঘোষণা এবং এ বিষয়ক কর্মসূচি বাস্তবায়নে তাদের প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করে। প্রতিনিধি দলগুলো জাতিসংঘে শান্তির সংস্কৃতির ধারণাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান।

১১২টি দেশ এ বছর বাংলাদেশের এই রেজুল্যুশনটিকে কো-স্পন্সর করেছে, যা ‘শান্তির সংস্কৃতি’ শীর্ষক রেজ্যুলেশনটির প্রতি জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অব্যাহত সমর্থনের সাক্ষ্য বহন করে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 4636
  • Total Visits: 751038
  • Total Visitors: 2
  • Total Countries: 1127

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ সোমবার, ২০শে মে, ২০২৪ ইং
  • ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
  • ১১ই জ্বিলকদ, ১৪৪৫ হিজরী
  • এখন সময়, রাত ১২:৫৩

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
20212223242526
2728293031  
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018